সেক্স যখন স্ক্রিনেই উপভোগ্য…

সেক্স যখন স্ক্রিনেই উপভোগ্য…


সেক্স যখন স্ক্রিনেই উপভোগ্য, ভালবাসা নামক শব্দটাই তখন দুর্বোধ্য।

পর্ন দ্বারা যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের কাছে এর ভয়াবহতা বর্ণনা করার কোন প্রয়োজন হয় না। কারণ, তারা নিজেরাই এক একজন উদাহরণ হয়ে বসে আছেন। এখন মুক্তির পথ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু যে ক্ষতি তারা নিজেদের জীবনে করে ফেলেছে তা কাটিয়ে উঠতে হয়ত অনেক সময় লেগে যাবে।

যে ছেলেটি এখন পর্ন আসক্তি থেকে মুক্তির জন্য হাহাকার করছে সে-ই হয়ত কোনো এক সময় বলেছিল, বিয়ে করলে সব ঠিক হয়ে যাবে। অথচ মুক্তির জন্য কোন সিদ্ধান্ত সে গ্রহণ করেনি। গায়ে হাওয়া লাগিয়ে পর্নের ফ্যান্টাসি ওয়ার্ল্ড এ ঘুরেছিল। আজ সে চাইলেও তার স্ত্রীকে মন থেকে ভালবাসতে পারে না। অফিস থেকে বাড়ি ফিরে হারিয়ে যায় মোবাইলে। স্ত্রীর অসহায় মুখটা দেখার সময় তার নেই।

রাতের পর রাত তার স্ত্রী বিছানায় এপাশ ওপাশ করে নির্ঘুম রাত কাটিয়ে দেয়। কেঁদে বালিশ ভেজায়। কিন্তু স্বামী যে আজ বন্দী এক নির্দয় কারাগারে। স্ত্রীর চোখে আর সে ভালোবাসা খুঁজে পায় না। সে ভালোবাসা হাতড়ে বেড়ায় চার কোনা স্ক্রিনে, যা দিন শেষে কারণ হয়ে দাঁড়ায় সব হতাশা, দুশ্চিন্তা, অবসাদ আর স্ত্রীর সাথে আর ঝগড়ার।

আমি কোন গল্প বলছি না। এটা বাস্তব কাহিনী। অনেক দম্পতির জীবনেই এমনটা ঘটছে। অ্যামেরিকায় প্রতি বছর শতকরা ৫৬টি ডিভোর্সের একটি কারণ পর্ন। আমাদের দেশেও, বিশেষ করে ঢাকায় ডিভোর্সের হার ভয়াবহভাবে বাড়ছে। এখানে কি পর্নের প্রভাব থাকতে পারে না? অবশ্যই আছে, তবে পরিসংখ্যান আমাদের জানা নেই।

আপনারা নিজেরাই চিন্তা করুন, একজন ব্যক্তি বলছেন, তিনি বিয়ে করলেই পর্ন ছেড়ে দেবেন। অথচ বিয়ের আগে তিনি আসক্তি মোকাবেলার কোন পদক্ষেপই নেননি। আসক্তির তুঙ্গে থাকা অবস্থায় বিয়ে করলে সে দুই এক মাস পর আবার খালি ঘর পেয়ে পর্ন দেখা শুরু করা কোন অস্বাভাবিক ব্যাপার হবে না। আমরা এমন বেশ কিছু বিবাহিত কেস পেয়েছি।

আসক্তি এত সহজ জিনিস নয়, ভাই। বিয়ে অবশ্যই আমাদের দৃষ্টির হেফাজত করে। এটি অবশ্যই পর্ন থেকে মুক্তির সবচেয়ে কার্যকরী উপায়গুলোর একটি। কিন্তু শুধুমাত্র তাদের জন্য, যারা নিজেরা এ আসক্তি থেকে মুক্ত হতে চায়। যারা শুধু বিয়ের উপর নির্ভর করে বসে থাকে না। বরং নিজের প্রিয়তমা স্ত্রীকে প্রকৃত ভালোবাসা দিতে তারা আগে থেকেই এই আসক্তি থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে আসার চেষ্টা করে। আসক্তিতে ডুবে থাকা ব্রেইন নিয়ে তারা বাসর ঘরে প্রবেশ করে না। কোন প্রকৃত পুরুষ এটা করতে পারে না।

উপরের কথাগুলো অনেকের জীবনের সাথেই মিলে যাবে। তারা প্লিজ আশাহত হবেন না। বড় মন নিয়ে শুধু এতটুকুই ভাবুন যে, আপনাদের ঘটনা অন্যদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে ভূমিকা রাখতে পারে। মুক্তির পথ অবশ্যই আছে। কথাগুলো আমরা তাদের জন্য শেয়ার করছি, যারা এখনও সচেতন হচ্ছে না, যারা গবেষণা থেকে প্রাপ্ত পর্নের ব্রেইন ইফেক্ট এর কথা শুনে, পর্ন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত SPECT স্ক্যান করা ব্রেইনের ছবি দেখে হাসির ইমোটিকন চাপে। মারাত্মক কোন ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আগেই যেন তারা ফিরে আসে, তাদের শেষ পরিণতি যেন ডিভোর্স না হয় এর জন্যই আমাদের এ প্রচেষ্টা।